প্রত্যাবর্তন (Prottaborton)
Author: Al Rayhan Himel | ⌚Last Updated On: March 10, 2024
মুসলিম ঘরে জন্মগ্রহণ করলেও আমাদের মধ্যে অনেকেই ইসলামের নিয়মকানুন, বিধিনিষেধ নিয়ে কোনো তোয়াক্কা করি না। যেটাকে বলা যায় নামকাওয়াস্তে মুসলিম। সবসময় অন্ধকার পথে চললেও আমাদের মনে হয় আমরা সঠিক পথে আছি৷ তবে এরকম অন্ধকার পথে চলতে চলতে মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা ভুল পথে পড়ে রয়েছি। আমাদের এখন সঠিক পথে ফিরতে হবে। এরকম ভাবনা আপনার মনে কখনো উদয় হলে প্রত্যাবর্তন বইটি আপনার একবার খুলে দেখা উচিত। সমকালীন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইটি ২০১৮ সালে প্রথম বাজারে আসে এবং পাঠকমনে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়।
প্রত্যাবর্তন
Key Specifications
বইয়ের নাম: প্রত্যাবর্তন
ক্যাটাগরি: ইসলামি বই: আত্ম-উন্নয়ন
সম্পাদক: আরিফ আজাদ
প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন
ভাষা: বাংলা
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২২৫
সংস্করণ: ১ম প্রকাশ, ২০১৮
প্রত্যাবর্তন বইয়ের সূচিপত্র
প্রথম অধ্যায়ঃ আলোর পথে যাত্রা
সরল পথের খোঁজে
টাইট্রেশন
এবং, ফিরেছি আমিও
নীড়ে ফেরার গল্প
পথিকের পথচলা
আলোয় ভূবন ভরা
সেই সব দিনরাত্রি
অন্ধের যাত্রা সমীকরণ
আপনারে খুঁজিয়া বেড়াই
পথ ও পথিক
সেই সময়ের উপাখ্যান
সংশয় থেকে বিশ্বাস: এক পথিকের গল্প
আমি এবং আমাদের গল্প
গল্পটা হাসি-কান্নার
ফিরে পাওয়া গুপ্তধন
চলতে ফিরতে যেমন দেখেছি
দ্য আগলি ডাকলিং
প্রত্যাবর্তন!
ফিরে আসার গল্প
আমার মায়ের বিয়ের প্রস্তাব!
চলতে চলতে আলোর দেখা
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ স্রষ্টার সন্ধানে
সেই মিছিলের দেখা
শুদ্ধ আলোর প্রথম প্রহর
যেমন ছিলাম, যেমন আছি
ফেরার কথাই ছিলো
প্রত্যাবর্তন বইয়ের কিছু অংশ পড়ে দেখুন:
Headline: সরল পথের খোঁজে
দীনের বাইরে বড় হওয়া একজন কিশোর যেভাবে, যে পরিবেশে বেড়ে ওঠে, আমার বেড়ে ওঠার গল্পগুলোও ঠিক সেরকম। খুব ডানপিটে স্বভাবের ছিলাম। মানুষকে কষ্ট দেওয়া, পশুপাখিকে কষ্ট দেওয়া, বন্ধুদের সাথে মিলে অন্যের বাগানের আম চুরি করে খাওয়া, আব্বুর পকেটের টাকা চুরি করা, আত্মীয়-স্বজনের সাথে খারাপ আচরণ করা, স্কুল পালানো, সিনেমা হলে যাওয়া, পূজা-মণ্ডপে যাওয়া—ইত্যাদি ছিল আমার জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ ।
বাড়িতে নামাজ পড়েতেন শুধু আমার মা। বাবা নামাজ পড়তেন না, শুধু পড়াশোনার জন্যে বকাঝকা করতেন। মা যদিও নামাজের জন্যে হালকা বকাবকি করতেন; কিন্তু দেখা যেত, জুমার দিন জুমার নামাজেও আমি যেতে চাইতাম না। নামাজে যাওয়ার কথা বলে অন্যদিকে চলে যেতাম। আমি ছিলাম প্রচণ্ড রকম সিনেমার পোঁকা। তখন আমাদের বাড়িতে টেলিভিশন ছিল না। পাশের বাড়িতে সিনেমা দেখতে দেখতেই আমার বেশিরভাগ সময় কাটত।
আমার এমন ডানপিটে স্বভাবে মা আমার উপর চরম বিরক্ত হয়ে উঠলেন। অবশ্য বিরক্ত হবারই কথা। বাবা আমাকে কথা শুনাতেন কম, আমার কৃতকর্মের সমস্ত ঝাল তিনি মায়ের উপরেই ঝাড়তেন। মায়ের আস্কারাতেই আমি মাথায় চড়েছি, নষ্ট হয়ে গেছি, কু-পথে চলে গেছি—ইত্যাদি নানান কথার বাণে জর্জরিত হতেন আমার মা। মা একদিন করলেন কী, আমাকে পাশের বাড়ি থেকে ধরে বাসায় নিয়ে এলেন। বাসায় ঢুকিয়ে মা নিজের গলায় দড়ি পেঁছিয়ে আত্মহত্যা করতে চাইলেন। আর চিৎকার করে বলতে লাগলেন, ‘আমি মরে গেলে শান্তি পাবি, তাই না? এই দ্যাখ, আমি মরে যাচ্ছি…’
আমি ছিলাম আমার বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। মা বলেছিলেন, পর পর ছয়টা মেয়ে সন্তানের পর আমি নাকি তাদের কাছে আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত হিসেবে জন্মেছি। রক্ষণশীল সমাজের চোখে তখন ছেলে সন্তান মানেই সবকিছু। আর মেয়ে সন্তান মানেই বোঝা। আমার বাবা-মায়েরও এরকম ধারণা। তারা ভাবতেন, আমিই তো তাদের অন্ধকারে আলোস্বরূপ। বৃদ্ধ বয়সের লাঠি। এজন্য আমি তাদের কাছে ছিলাম আদরের দুলালের মতো। সেই আমিই যখন এরকম বেঁকে বসলাম, তখন তারা দুজন আমাকে নিয়ে খুব হতাশ হয়ে পড়লেন।………….
Headline: টাইট্রেশন
– ‘আচ্ছা তোরা রাজনীতি করতে চাস কেন? একজন একজন করে বল’।
“ভাই, আমি ইঁদুরের মতো বাঁচতে চাই না’।
হিদায়াত, পথের খোঁজ। কোন পথ? কেমন সে পথ? পিচঢালা, না মেঠো, না ডিজিটাল? সে পথ বড় সহজ, বড় আরাম। ছোটবেলা থেকে আমাদের মাথায় পুঁজিবাদী, ‘স্বল্পমূল্যে শ্রমসন্ধানী’ সিস্টেম একটা কথা শিখিয়ে দিয়েছে—লাইফ ইজ নট অ্যা বেড অব রোজেজ। জীবনটা ফুলের বিছানা নয়। জীবন খুব কঠিন, টিকে থাকার জন্য প্রতিযোগিতা করতে হবে। বস্তুবাদী সমাজে বস্তু কেনার যোগ্যতা চাই, নাহলে কমফোর্ট জোনে থাকতে পারবা না । লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে সে। গাড়ি-বাড়ি-নারী-কাঁড়িকাঁড়ি কড়ি-ছড়ি এগুলোর জন্য দৌড়াও, ভাগো।
আরেকটা পথ আছে, কমফোর্ট জোনে ঢোকার পথ, আরাম-শান্তি-সুখের পথ। কমফোর্টের জন্য যে পথে উন্নত বস্তু লাগে না, কুঁড়েঘরেই-অর্ধাহারেই হাঁটা পায়েই সেখানে কমফোর্ট মেলে। অর্জনের প্রতিযোগিতা নেই সেপথে। শুধু আছে বিসর্জনের প্রতিযোগিতা। ‘বস্তু ভোগের মাঝে তৃপ্তি’ আগের ওই পথে। আর এই পথে ——ভোগে নয়, ত্যাগেই সুখ’, আসল সুখ।
এই পথের সন্ধান পাওয়াকেই বলছি হিদায়াত, যে পথের দুধারে ফুলের মতো ফুটে থাকে সুখেরা। আমি কোন কিতাবী নীতিবাক্য বা কম্যুনিজমীয় ইউটোপিয়া বা ঠাকুরমার ঝুলির কথা বলছি না। রেগুলার শেভের আড়ালে পাকা দাড়ির গোড়ার মতো বাস্তব, কড়া মেকআপের আড়ালে প্রৌঢ়ার ভাঁজ পড়া চামড়ার মতো বাস্তব এক পথের অস্তিত্ব জানাচ্ছি আপনাদের, যেখানে সুখের অভিনয় করে প্রতি মুহূর্তে মরতে হয় না। সে রাস্তায় ‘দম নিলেও ঘ্রাণ পাওয়া যায় সুখের, এতটাই সস্তা সেখানে সুখ। একটা ছেলের গল্প শোনাবো আজ।
‘ছেলেটি’র জগতটাও টিপিক্যাল মধ্যবিত্ত-সন্তানের জীবন-দর্শনে ঠাসা। পুঁজিবাদের সেবা করে নিজের কমফোর্ট জোন নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ‘পুঁজিবাদের ঠিক করে দেওয়া শিক্ষাটা ভালোমতো আয়ত্ত্ব করাটা জরুরি। যেখানে ভালো বাবা, ভালো স্বামী, ভালো সন্তান কীভাবে হতে হয়—তা নেই। ভালো চাকর হয়ে কীভাবে ভালো চাকরি করা যায়, শুধু সেটা শিখলেই যথেষ্ট। এরপর বস্তু আহরণের জন্য এমনভাবে চাকরগিরি করবে, যাতে সন্তান বাপ-মাকে কাছে না পায়। বস্তুর জন্য যৌতুক চেয়ে বউ পেটাতেও………..
FAQs About Prottaborton
Q: প্রত্যাবর্তন বইটির লেখক কে?
প্রত্যাবর্তন বইটির লেখক আরিফ আজাদ।
Q: প্রত্যাবর্তন কি ধরনের বই?
প্রত্যাবর্তন বইটি আরিফ আজাদ রচিত একটি আত্নউন্নয়নমূলক ইসলামি বই।
Q: প্রত্যাবর্তন বইটির দাম কত?
এই বইটির দাম ২২৮ টাকা (মূল্য পরিবর্তনশীল)।